অনলাইন মিডিয়া লিংক

ফেসবুক
  • বাংলা ফেসবুক পেজ
এখনই দেখুন
ইউটিউব
  • বাংলা ইউটিউব চ্যানেল
এখনই দেখুন
অডিও
  • অডিও প্রবচন
এখনই দেখুন
ছবি
  • ছবি
এখনই দেখুন
প্রবচন অনুলিপি
  • প্রবচন অনুলিপি
এখনই দেখুন

জীবন বৃত্তান্ত

শ্রী শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ

ওঁ বিষ্ণুপাদ পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য অষ্টোত্তরশত শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী ১৯৪৯ খ্রীষ্টাব্দের ৯ই এপ্রিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের উইসকন্‌সিন প্রদেশের মিলৌকি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি যে দিনটিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেটি ছিল কামদা একাদশী, যে একাদশীটি ঠিক রাম নবমীর পরেই পালিত হয়।

তাঁর শৈশবকালে তিনি আধ্যাত্মিকতায় অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও মহান কৌতূহলতা প্রদর্শন করেন। তাঁর বয়স যখন মাত্র এগারো বছর, তাঁর পিতামহের পরামর্শে তিনি ভগবানের দিব্য নাম জপ করার মাধ্যমে নিজেকে এক চর্মরোগের থেকে আরোগ্য করেন।

তাঁর চৌদ্দ বছর বয়সে তিনি সেন্ট্‌ জন্স একাডেমী নামক একটি মহাবিদ্যালয়ে যাওয়ার পূর্ব প্রস্তুতিমূলক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। যেখান থেকে তিনি অনায়াসেই স্নাতক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ প্রাপ্ত নম্বর অর্জন করে তাঁর শ্রেণীতে প্রথমস্থান অধিকার করেন। একজন ছাত্রের মধ্যে মহান প্রতিভা রয়েছে সেটি উপলব্ধি করে আমেরিকার বেশ কয়েকটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বৃত্তি প্রদান করেছিল। তিনি ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। নবীন ছাত্ররূপে একজন অতিথির নিকট হতে ভগবান বুদ্ধের জীবনদর্শন শ্রবণ করে তাঁর অন্তরাত্মা জাগরিত হয়ে ওঠে এবং জড় শিক্ষার প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলেন। তারপর তিনি পারমার্থিক শিক্ষকের সন্ধান করতে শুরু করেন। যেহেতু পাশ্চাত্যে তিনি কোন সদ্‌গুরুর সন্ধান পেলেন না তাই তিনি ভারতবর্ষে পাড়ি দিতে মনস্থির করলেন।

About

ব্যাসপূজা

ব্যাস পূজার অর্থ

পরম পুরুষােত্তম শ্রীকৃষ্ণের শক্ত্যাবেশ অবতার শ্রীল কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসদেব । স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের সপ্তবিধ আপন শক্তিরাজির কোন একটি বা একাধিক শক্তির অভিব্যক্ত প্রকাশ করেন যে ভক্তজন, তাঁরই শক্ত্যাবেশ অবতার । শ্রীল ব্যাসদেবের মধ্যে জ্ঞান, শক্তি এতখানি সঞ্চারিত হয়েছিল যে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাকে ‘সর্বজ্ঞ’ বলে বর্ণনা করেছেন। শ্রীল সনাতন গােস্বামীর কাছে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এ বিষয়ে সুপ্রমাণিত করে বলেছিলেন, মুনির বাক্য শাস্ত্র পরমান’- এই মুনির দ্বারা কথিত সবকিছুই বৈদিক প্রমাণসম্মত এবং কেবল তার কথার মাধ্যমেই জড়জাগতিক বদ্ধ জীবাত্মকূল পারমার্থিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে । পাঁচ হাজার বছরেরও আগে শ্রীল ব্যাসদেব বর্তমান কলহময় কলিযুগের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, কলিযুগে মানবধর্ম, সত্যবাদিতা, শুচিতা, শান্তিভাব, করুণা, স্মৃতি, দেহবল এবং আয়ু দ্রুতগতিতে অবনতির দিকে চলবে এবং মানবজাতি নিম্নস্তরের পশু-পর্যায়ে অধঃপতিত না হওয়া অবধি এমনই চলতে থাকবে।

অর্জন

কৃষ্ণভাবনাকে সীমাহীনভাবে প্রসারিত করা

নবদ্বীপ-মন্ডলের উন্নয়ন

মায়াপুর ধামের উন্নয়ন

৫০ হাজার দীক্ষিত শিষ্য

ভক্তিবেদান্ত স্বামী চ্যারিটি ট্রাস্ট

TOVP নির্মান

এক মাসে ১০ হাজার বড় গ্রন্থ এবং ১ লক্ষ ছোট গ্রন্থ বিতরণ করা

নাম-হট্ট বিকাশ

বাংলাদেশ ও নেপালে প্রচার করা

মায়াপুরে ২৪ ঘন্টা হরিনাম কীর্তন

প্রতিষ্ঠিত মন্দির এবং বিগ্রহ সমূহ

এখানে সকল তথ্য প্রদান করা হয় নি। যথাক্রমে তা সংগ্রহ করে প্রদান করা হবে।

নামহট্ট প্রচার

যেমনটি আমরা সবাই জানি যে, শ্রীমন্ নিত্যানন্দ প্রভু সুরভী-কুঞ্জ গোদ্রুমদ্বীপে নামহট্ট অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছিলেন। এবং গৌড়-দেশের প্রতিটি নগর ও গ্রাম দিব্য-পবিত্র নামের দ্বারা প্লাবিত করেছিলেন। তারপরে শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর, সেই নামহট্ট কর্মসূচীর পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন যা শ্রীমন নিত্যানন্দ প্রভু মহান বীরত্ব, শুদ্ধত্ব ও ভক্তির সহিত সমগ্র বাংলায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি শত শত প্রপান্নাশ্রমের সূচনা করেন। নামহট্ট প্রচারটি খুব সুন্দরভাবে পদ্ধতিগতভাবে, কাঠামোগতভাবে সংগঠিত ছিল এবং এটি “শ্রীগোদ্রুম কল্পাটবি” নামে পরিচিত তাঁর গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে। সময় যতই অতিবাহিত হতে থাকল নামহট্ট প্রচার ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে গেল।

১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে, শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ বাংলায় এবং এর আশেপাশের ১০০০০ লোকজন নিয়ে এক মহতি সংকীর্তন প্রতিবাদের আয়োজন করেছিলেন। এটি ছিল শ্রীমায়াপুর মন্দির আক্রমণের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। সংকীর্তন প্রতিবাদের এই বিশাল পদযাত্রাটি আজ থেকে ৫০০ বছর পূর্বে চাঁদ কাজীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মতো স্মরণ করা হয়ে থাকে।
তার পরে, শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ এক সঙ্কীর্তন সংস্থা গঠন করতে চেয়েছিলেন। এবং অনেক গ্রামবাসী শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থাবলী পাঠ করার পর পূর্ণকালীন ভক্ত হিসেবে ইস্‌কনে যোগদান করার জন্য তাঁদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু, মহারাজ বুঝতে পেরেছিলেন যে কীভাবে হাজার হাজার লোককে তাঁদের পরিবার, গবাদি ইত্যাদির সাথে সমন্বয়বিধান করা সম্ভব।

সেই সময়ে, শ্রীশ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী মহারাজ একখানি গৌড়ীয় পত্রিকা নিয়ে এসেছিলেন যা ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে মথুরা থেকে কেশব মহারাজের মঠ দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে আমাদের শ্রীল প্রভুপাদ একজন অন্যতম সম্পাদক হিসাবে সেবাকার্য করছিলেন। আর সেখানে তিনি শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের শ্রীগোদ্রুম কল্পাটবীর পাঁচটি অধ্যায়ের পুনঃপ্রকাশ করেন এবং সেই পাঁচটি অধ্যায় পাঠ করে এবং আমাদের পূর্বতন আচার্যবর্গের দৃষ্টিভঙ্গি উপলব্ধির মাধ্যমে, তিনি পূর্ব ভারতে নামহট্টের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আর এটি শ্রীমন্মহাপ্রভুর করুণার সুনামি তৈরি করেছিল এবং প্রতিটি গ্রাম প্লাবিত করে। শ্রীশ্রীমৎ ভক্তি রাঘব স্বামী মহারাজ, শ্রীশ্রীমৎ গৌরাঙ্গ প্রেম স্বামী মহারাজ, শ্রীশ্রীমৎ ভক্তি বিলাস গৌরচন্দ্র স্বামী মহারাজ ও আরও অনেক ভক্ত এই মহান প্রচার সূত্রটি গ্রহণ করেছিলেন এবং বিশ্বজুড়ে বিশুদ্ধ ভক্তি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এখন পূর্ব ভারতে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষের কাছে এই প্রচার পৌঁছে গেছে।
এই নামহট্ট হলো আসলে গৌড়-দেশের আদি সংস্কৃতি, গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের সংস্কৃতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে শ্রীমন্মহাপ্রভুর করুণা বুঝতে সাহায্য করেছে। আর শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ শ্রীল প্রভুপাদের বিজয় পতাকা হয়ে এই নামহট্ট প্রচারের মাধ্যমে বিশ্বকে জয় করছেন, এবং শ্রীল প্রভুপাদ ও পূর্বতন আচার্যবর্গের ইচ্ছা অনুসারে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রের মহিমা উন্মোচন করছেন।

ভক্তিবেদান্ত স্বামী চ্যারিটি ট্রাস্ট

প্রতিষ্ঠিত সাল : ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দ

শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর সময়ে স্বল্প কিছু ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন: BBT (ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট), MVT (মায়াপুর বৃন্দাবন ট্রাস্ট), BSCT (ভক্তিবেদান্ত স্বামী চ্যারিটি ট্রাস্ট)।
‘ভক্তিবেদান্ত স্বামী চ্যারিটি ট্রাস্ট’ হলো সেই ট্রাস্ট যেটি শ্রীল প্রভুপাদ এই ধরনী থেকে তিরোভাব হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তৈরি করেছিলেন। শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর প্রভুপাদ, তাঁর মহান প্রচেষ্টা ও দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শ্রীনবদ্বীপ মণ্ডলকে গড়ে তুলতে শুরু করেছিলেন। আর তিনি নিজেও বহু দিব্য স্থান অনুসন্ধান করেছেন, এবং গৌরমণ্ডল ভূমি অন্বেষণ করেছেন। তিনি গৌড়-মণ্ডল-ভূমিকে ঘিরে বিশাল পরিক্রমার প্রবর্তন করেন।

শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের তাৎপর্যে তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এবং তাঁর পার্ষদবর্গের শ্রীপাট (লীলা-স্থানসমূহ) সম্বন্ধে যা কিছু অনুবাদ করেছেন তা তিনি শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর প্রভুপাদের অনুভাষ্য থেকে গ্রহণ করেছেন এটি প্রমাণ করার জন্য যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর লীলাসমূহ কোন পৌরাণিক কাহিনী নয় এবং সেই স্থানগুলি বা শ্রীপাটগুলি এখনও বিদ্যমান। শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, যাঁকে এই পারমার্থিক জগতের বিকাশের জন্য সেবা প্রদান করা হয়েছিল, তিনি এই নির্দেশ গ্রহণ করেছিলেন এবং আরও শ্রীপাট অন্বেষণ করা ও তার সাথে সাথে সংকীর্তন, গ্রন্থ বিতরণ, শ্রীবিগ্রহ নির্মাণ, তাঁতশিল্প তৈরি, বন্যা ত্রাণ, জীবনের জন্য খাদ্য (ফুড ফর লাইফ) ইত্যাদি কর্মযজ্ঞ শুরু করেছিলেন। আর শ্রীল প্রভুপাদের সাথে তিনি কয়েকটি শ্রীপাটেও ভ্রমণ করেছেন। এবং শ্রীল প্রভুপাদকে বিভিন্ন শ্রীপাট সম্পর্কে বিবরণ দেন এবং শ্রীপাটগুলির মন্দির রক্ষণাবেক্ষণে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।

১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীল প্রভুপাদ ভক্তিবেদান্ত স্বামী চ্যারিটি ট্রাস্ট (BSCT) গঠন করেন এবং শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজকে আজীবন সভাপতি (চেয়ারম্যান) করে গৌর-মণ্ডল ভূমির সীমানা ব্যাখ্যা করেন। এছাড়াও, তিনি পূর্ববর্তী আচার্যবর্গকে সন্তুষ্টি বিধান করার এক উপায় ব্যাখ্যা করেন। শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ এই নির্দেশকে নিজের জীবন ও আত্মা হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন, এই শ্রীপাট গুলির সন্ধানে প্রবলভাবে তিনি শতাধিক গ্রামে ভ্রমণ করেছিলেন এবং সেই সমস্ত শ্রীপাটে মন্দির, নাট-মন্দির, রন্ধনশালা ইত্যাদি নির্মাণ করে সেই শ্রীপাটগুলির বিকাশ ঘটিয়েছেন। এইভাবে বিগত ৪৫ বছর ধরে তিনি অক্লান্তভাবে শ্রীল প্রভুপাদ, শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর প্রভুপাদ, গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ তথা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সেবা করে চলেছেন।

মায়াপুর-বৃন্দাবন ট্রাস্ট

এই ট্রাস্টটি শ্রীল প্রভুপাদ দ্বারা গঠিত হয়েছিল। ‘মায়াপুর-বৃন্দাবন ট্রাস্ট’-কে বিশেষতঃ শ্রীল প্রভুপাদের গুরু দক্ষিণার অর্থের দ্বারা ধরে রেখেছিল। শ্রীল প্রভুপাদ এই অর্থকে চারই-বিগ্রহের সেবায় ব্যবহার করার নির্দেশ দেন, বিশেষ করে যখন তাঁদের সেবার প্রয়োজন হয়, যথা: শ্রীমায়াপুর ধামে শ্রীশ্রীরাধা-মাধব, শ্রীবৃন্দাবন ধামে শ্রীশ্রী রাধা-শ্যামসুন্দর, হায়দ্রাবাদে শ্রীশ্রী রাধামদন-মোহন এবং মুম্বাইয়ের জুহুতে শ্রীশ্রী রাধা-রাসবিহারী, এই চারি শ্রীবিগ্রহগণের সেবায়। তবে শ্রীল প্রভুপাদের শিষ্যগণ তাঁদের ঐকান্তিক সেবা দ্বারা এই সমস্ত মন্দিরগুলিকে অত্যন্ত উৎকৃষ্ট মানের ও ঐশ্বর্যপূর্ণ বিগ্রহ সেবার্চনে রেখেছেন।

শ্রীবিগ্রহের সেবার্চন ব্যতিরেকেও, MVT ট্রাস্টের অর্থসমূহ এই সমস্ত মন্দিরগুলির উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়। আর শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ হচ্ছেন এই ‘এমভিটি ট্রাস্টের’ অন্যতম একজন ট্রাস্টি, তিনি শ্রীশ্রীমৎ গোপাল কৃষ্ণ গোস্বামী মহারাজের সাথে একযোগে সেবা করছেন।

সারস্বত গৌড়ীয় বৈষ্ণব অ্যাসোসিয়েশন (এস জি ভি এ)

প্রতিষ্ঠিত সাল :

শ্রীল প্রভুপাদ, তাঁর পারমার্থিক গুরুদেব শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর প্রভুপাদের আদেশ অনুসারে কার্য করা এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণীকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর গুরু-ভ্রাতাদের একত্রিত করার অনেক চেষ্টা করেছিলেন। তবে তাঁর ইচ্ছামত তাঁর প্রচেষ্টা সফল হয়নি, কিন্তু তারপরও শ্রীল প্রভুপাদের প্রচারের প্রচেষ্টা এবং তাঁর ফল তাঁর গুরুভ্রাতাগণের দ্বারা খুব প্রশংসিত হয়েছিল, কেউ কেউ আবার তাঁর প্রশংসা করছিলেন না, তবে তাঁদের অধিকাংশই সারা বিশ্বে তাঁর প্রচারে খুব খুশি ছিলেন।

১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে, এই জগৎ ছেড়ে যাওয়ার পূর্বে, শ্রীল প্রভুপাদ ‘ভক্তিবেদান্ত স্বামী চ্যারিটি ট্রাস্টের’ অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসাবে তাঁর ইচ্ছাকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। আর তা হলো শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের অনুগামীগণকে একত্রিত করা।

শ্রীল প্রভুপাদের এই অভীষ্ট পূরণ করার জন্য শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ এই মহান কার্যটি তাঁর প্রাথমিক কর্তব্য হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। এবং সারস্বত গৌড়ীয় বৈষ্ণব সভা (সঙ্গ) গঠন করেন। তাঁর প্রচেষ্টা ও সম্পর্কের দ্বারা, তিনি শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর প্রভুপাদের বহু শিষ্যগণের হৃদয় জয় করেছেন। আর তাঁরা “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যতা” নীতি গ্রহণ করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ সমস্ত মঠকে একত্রিত করার প্রচেষ্টা করছেন এবং বৃহত্তর ও ব্যাপক অর্থে গুরু-পরম্পরা ও শ্রীনবদ্বীপ ধামের সেবা করার চেষ্টা করছেন।

ইস্‌কন শ্রীরঙ্গম

প্রতিষ্ঠিত সাল :

যেমনটি আমরা সকলেই জানি, শ্রীরঙ্গম হলো শ্রীসম্প্রদায়ের প্রধান কার্যালয়। শ্রীপাদ রামানুজ আচার্যের অনুগামীগণ, যাঁরা শ্রীবৈষ্ণব নামে পরিচিত, এই স্থানটিকে দিব্য ধাম ভু-লোক বৈকুণ্ঠ হিসাবে পালন করে থাকেন। এটি পবিত্র কাবেরী নদী (কৃতমালা) দ্বারা বেষ্টিত একটি দ্বীপ বিশেষ। এই দিব্যময় ভূমি থেকেই শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামী শ্রীমন্মহাপ্রভুর নিকট কৃপা লাভ করেছিলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর দক্ষিণ ভারত সফরের সময় এখানে চার মাস (চাতুর্মাস) অতিবাহিত করেছিলেন। আমাদের গৌড়ীয় বৈষ্ণব আচার্যবর্গ এখানে সময় অতিবাহিত করেন এবং বহু শতাব্দী ধরে গৌড়ীয় ধর্ম প্রচার করেন।

১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজের শিষ্য রুকমিহা দাস, একজন সংকীর্তন ভক্ত শ্রীরঙ্গমের পদ্মাবতী কল্যাণ মন্ডপে একটি কেন্দ্র প্রবর্তণ করেছিলেন। ২০০০খ্রিষ্টাব্দে তাঁরা তাঁদের নিজস্ব ভূমি লাভ করেন এবং শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ শ্রীল প্রভুপাদ পূজা করে তা উদ্বোধন করেন। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে তাঁরা তাঁদের নিজস্ব ভূমিতে একটি ছোট্ট কুঁড়েঘর দিয়ে অকিঞ্চনভাবে তার প্রারম্ভ করেন। ক্রমে ক্রমে বছরের পর বছর ধরে শ্রীরঙ্গমের চতুর্দিকে প্রচারের পর তা ছড়িয়ে পড়ে এবং বহু ভক্ত শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজের নিকট হতে দীক্ষা গ্রহণ করেন।

দক্ষিণ ভারত সাফারি কর্মসূচী চলাকালীন শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজ বিদেশ থেকে শত শত ভক্তকে নিয়ে আসতেন এবং শ্রীরঙ্গম পরিদর্শনে যেতেন। সুবিখ্যাত এই শ্রীরঙ্গনাথ শ্রীবিগ্রহ যাঁকে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র স্বয়ং পূজা করেছিলেন।
সেখানে, শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজের বেশ কয়েকজন শিষ্য এই কেন্দ্রের উন্নয়নে তাঁদের সময় এবং শক্তি উৎসর্গ করেন, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের নাম হলো: শ্রীপাদ রথীশা দাস, বনমালি গোপাল দাস, রত্নবাহু গৌরাঙ্গ দাস (যিনি এই কেন্দ্রের জন্য জমি দান করেছিলেন), রঙ্গরাজ কৃষ্ণ দাস, অশোক গোবিন্দ দাস, দয়াল গোবিন্দ দাস, বর্তমানে নন্দ পুত্র দাস এই কেন্দ্রের তত্ত্বাবধান করছেন। অধিষ্ঠাতা শ্রীবিগ্রহগণ হলেন ‘শ্রীশ্রী জগন্নাথ, বলদেব, সুভদ্রা’ এবং ‘সুদর্শন’, ‘শ্রীশ্রী নিতাই-গৌরাঙ্গ’, ‘শ্রীশ্রী লক্ষ্মী-নরসিংহ’ এবং ‘শ্রীল প্রভুপাদ’। শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজের নির্দেশ অনুসারে এখন SIHE (শ্রীরঙ্গম ইন্‌স্টিটিউট অফ্‌ হায়ার এডুকেশন) তামিল ভাষায় ভক্তি-শাস্ত্রী পাঠ্যক্রম শেখানো শুরু করেছে। আর এখানে ইস্‌কনের সমস্ত প্রধান প্রধান উৎসবগুলি অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়।

ম্যাগাজিন

প্রশ্ন ও উত্তর

যখন তুমি গুরু এবং কৃষ্ণের সেবায় নিয়োজিত থাকবে তখন স্বাভাবিকভাবেই তুমি গুরু এবং কৃষ্ণের সান্নিধ্য থাকবে এবং এটি তুমি অনুভব করতে পারবে। সুতরাং আমরা সরাসরি গুরুদেব অথবা তার বাণীর সেবা করার চেষ্টা করি। এই প্রকারে আমরা যুক্ত থাকতে পারি।

অবশ্যই, আমাদের কৃষ্ণের আশ্রয় নেওয়া উচিত এবং নিজেদেরকে বাঁচানোর চেষ্টা করার জন্য আমাদের বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা উচিত। বাসুদেবের মতো, কংস যখন তার স্ত্রী দেবকীকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, তখন তিনি তাকে বাঁচানোর জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেছিলেন। অবশেষে, তিনি যখন কংসকে সমস্ত সন্তান দেবেন বলে বললেন, তিনি মেনে নিলেন।

শিক্ষাষ্টকের তৃতীয় শ্লোকটি মেনে চলার চেষ্টা করুন- নিজের জন্য কোন সম্মানের প্রত্যাশা ব্যতিরেকে সবাইকে সম্মান প্রদান করুন। বোধ হয় আপনি সবাইকে সম্মান প্রদর্শন করছেন না, যা করা আমাদের কর্তব্য। যখন আমরা অবহেলা করি তখন আমাদেরকে ভুগতে হবে। আমাদের উচিত বৈষ্ণবদের প্রশংসা করা এবং এটি আমাদের সাফল্যের গোপন চাবিকাঠি।

আমাদের পক্ষে বোঝা শক্ত কখন আমরা ভগবদ্ধামে ফিরে যেতে পারবো, এবং এটি শ্রীকৃষ্ণের দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং আমরা তার পূর্বে যেতে পারি না। তো, আমরা কৃষ্ণভাবনামৃত অনুশীলন করার চেষ্টা করি। তখন স্বাভাবিক ভাবেই আমরা শ্রীকৃষ্ণের ব্যাপারে চিন্তা করি, কারণ আমরা জানি না কতক্ষন বেঁচে থাকতে হবে সুতরাং আমাদের সর্বদাই কৃষ্ণের নিকট ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

অধ্যায়ন করে স্বাভাবিভাবেই চিনময় গুণাবলী অর্জন করা উচিত এবং অধ্যায়নের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই সে বিভিন্ন আধ্যাত্বিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গলাভের সুযোগ পায়, সুতরাং আমরা ঐ সমস্ত গুণাবলী অর্জনের চেষ্টা করি। এবং অন্তিমে আমরা অনেক কিছু অর্জন করতে পারি। অন্যান্য যে সমস্ত গুণাবলী রয়েছে যেমন ধৈর্য্য, সহ্যশক্তি সাধারণত গ্রন্থ অধ্যয়নের দ্বারা লাভ হয়।

বেশ, যদি আমরা মানসে মন্দির অথবা ধামে বাস করি এইভাবে ইন্টারনেটে আমি বিভিন্ন স্থান দর্শন করি। কিন্তু আমি অবশ্যই নিয়মিত মায়াপুরের মঙ্গলারতি তে যোগদান করি।এভাবে ইউটিউব, ফেসবুক, মায়াপুর টিভির মাধ্যমে আপনি অনেক মন্দিরের দর্শন লাভ করতে পারবেন আমরা এইভাবে মানসে পবিত্র ধাম দর্শন করতে পারি।

হ্যা, আসলে দুই প্রকারের ভক্ত রয়েছে, ভজনানন্দী এবং গোষ্ঠানন্দী। ভজনানন্দীরা তাদের ব্যক্তিগত মুক্তিলাভ কে জীবনের লক্ষ্য বলে গণ্য করে। গোষ্ঠানন্দীরা অন্যান্য ভক্তদেরকে সঙ্গে নিয়ে ভগবদ্ধামে ফিরে যেতে চায়। আমাদের পরম্পরা টি হল গোষ্ঠানন্দী পরম্পরা। আমরা কৃষ্ণভক্তি অনুশীলন করি এবং একইসঙ্গে ভক্ত সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করি সুতরাং আমাদের কাজ হল কৃষ্ণ ভক্তি অনুশীলনের সাথে সাথে প্রচারে অংশগ্রহণ করা।

শ্রীল প্রভুপাদ বলেছেন যে দীক্ষিত বা অদীক্ষিত যে কেউ ভক্তিশাস্ত্রী পাঠক্রমে অংশ নিতে পারবে। কিন্তু কেউ যদি সন্ন্যাস বা ব্রাহ্মণ দীক্ষা নিতে চায় বা গুরু হওয়ার জন্য তার কিছু আচার-ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করতে হয়। শিক্ষামূলক পাঠক্রমে যে কেউ অংশ নিতে পারে।

আমাদের বারোটির সবকটি গুণাবলী অর্জন করার জন্য চেষ্টা করা উচিত। যদি কোন ক্ষেত্রে আমাদের অসুবিধা হয় তাহলে আমাদের জ্যেষ্ঠ গুরুভ্রাতা অথবা গুরুদেবের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ । দীক্ষা গ্রহণের অর্থ হলো নবজন্ম গ্রহণ করা। জন্মের পরে অন্যান্য বিষয়ে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সেগুলি গড়ে তোলা যায়। এমনটি নয় যে জন্ম থেকেই আপনি সমস্ত গুণাবলী লাভ করবেন, অনুশীলনের মাধ্যমে আপনাকে সেগুলি অর্জন করতে হবে।

দীক্ষা আমাদের আধ্যাত্বিক জীবনের সূচনা মাত্র। আমাদের এমনটি ভাবা উচিত নয় যে দীক্ষার পরে সে খুব উচ্চ স্তরে পৌঁছে গেছে। দীক্ষাকে বলা হয় পারমার্থিক জন্মগ্রহণ। যদি আপনি অজন্মা থেকে যেতে চান তাহলে আপনার দীক্ষা গ্রহণের দরকার নেই। কিন্তু যদি আপনি জন্ম লাভ করতে চান তাহলে দীক্ষা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনাকে গুরু পরম্পরার সঙ্গে সংযুক্ত করে। এটি আপনাকে দিক্ষা গুরুর সাথেও যুক্ত করে। দীক্ষার পূর্বে সবকিছু কেবল অনুশীলন মাত্র। দীক্ষার সময় আপনি কিছু প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেন এবং সেগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কমপক্ষে ১৬ মালা জপ, চার নিয়ম পালন, এবং আমার শিষ্যদেরকে আমি আরো একটি প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করতে বলি - শ্রীল প্রভুপাদের নির্দেশসমূহ পালনে আমকে সহযোগিতা করা। সাধারনত এটুকুই যথেষ্ট। কিন্তু মাঝে মাঝে আমি কোন কোন ভক্তকে কিছু বিশেষ উপদেশ বা নির্দেশ প্রদান করে থাকি। তাদের সেটি পূরণ করা উচিৎ।

সাফারি

দৈনিক উক্তি

মে-০১

ভক্তদের হারানোর কিছু নেই, সবকিছুই প্রাপ্য

ভক্তরা যখন অহৈতুকীভাবে কৃষ্ণসেবা করে তখন তাদের হারানোর কিছু থাকে না এবং পরিণামে সে ভগবদ্ধামে ফিরে যায়। কিন্তু জড়বাদী লোকদের সারা জীবন হতাশায় পূর্ণ, যেখানে ভক্তদের জীবন সাফল্যের । কোনকিছু চিন্তা-ভাবনা না করে একজন যত বেশি ভক্তিমূলক সেবা করবে, বিশেষভাবে অহৈতুকী সেবা, সে তত বেশি ভয়শূন্য হতে পারবে ।

—০১ মে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দ, শ্রীমদ্ভাগবতম প্রবচন, নিউ তালবন, ইউ.এস.এ

মে-০২

কৃষ্ণের সেবায় আপনার চিন্তা ও বাক্যকে নিযুক্ত করুন

এই দেহ কখনো সুখ দেয়, কখনো দুঃখ দেয় । ভক্তিযোগে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আমরা কৃষ্ণের সেবায় আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো ব্যবহার করতে পারি। আমরা বলছি না তোমাকে জগতের সুখ ত্যাগ করতে হবে । কৃষ্ণ শুধু এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পাপকাজ পরিহার করতে বলেন এবং এই পন্থায় কৃষ্ণের সেবায় আপনার চিন্তা ও বাক্যকে নিযুক্ত করুন।

—০২ মে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ, দীক্ষা প্রবচন, নেপাল

মে ০৩

পরনিষ্ঠিত, সনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ

যারা তাদের বেশিরভাগ সময় ভক্তিমূলক সেবায় নিযুক্ত থাকে এবং বাকি সময় বর্ণাশ্রমে কাটায় তাদেরকে বলা হয় ‘পরনিষ্ঠিত’ এবং যারা তাদের বেশিরভাগ সময় বর্ণাশ্রমে নিযুক্ত থাকে এবং কিছু সময় ভক্তিমূলক সেবায় কাটায় তাদেরকে বলা হয় ‘সনিষ্ঠ’। যারা তাদের সমস্ত সময় ভক্তিমূলক সেবায় নিযুক্ত করতে সক্ষম তাদেরকে বলা হয় ‘নিরপেক্ষ'। এটি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। বাহ্যিকভাবে বানপ্রস্থ গ্রহণ করলে আপনি স্বর্গে একটি ভালো আসন পেতে পারেন, কিন্তু কৃষ্ণের সেবায় পূর্ণরূপে নিযুক্ত হওয়া অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।

—০৩ মে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ, সান্ধ্যকালীন দর্শন, চেন্নাই, ভারতবর্ষ

মে-০৪

১০,০০০ বছরের জন্য খোলা

বিশ্বে এরকম কোনো বিমান ব্যবস্থা নেই যেটি বলবে- আপনি একটি গান গেয়ে শোনান এবং আপনাকে এর জন্য একটি টিকেট দেয়া হবে এবং এটি একমুখী টিকেট। স্বগৃহে ফিরে যাওয়া, ভগবদ্ধামে প্রত্যাবর্তন। যদি কেউ একবার সেখানে যায়, সে আর ফিরে আসবে না। সেই কারণেই এটির এত বিশেষত্ব এর একটি জানালা ১০,০০০ বছরের জন্য খোলা। এখন এটি একটি বিশেষ সুযোগ, যে কেউ বিচার উপেক্ষা করে কোনোরূপ অপেক্ষা না করে সরাসরি ভগবদ্ধামে প্রত্যাবর্তন করতে পারে। এই সুযোগটি এখানে রয়েছে, ভগবানের নাম জপ করুন, সরল জীবন অতিবাহিত করুন, কৃষ্ণস্মরণ করুন, কৃষ্ণপ্রসাদ গ্রহণ করুন এবং ভগবদ্ধামে ফিরে যান।

—০৪ মে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ, প্রশ্নোত্তর কুটীর, ডারবান, দক্ষিণ আফ্রিকা

মে-০৫

মহামন্ত্রের সঞ্জীবনী শক্তি

হরেকৃষ্ণ- এই শব্দতরঙ্গ প্রাণবন্ত। এই শব্দতরঙ্গের যে নিজস্ব সঞ্জীবনী শক্তি রয়েছে, সেটিই পরম প্রাণশক্তি এবং আমরা যত তা জপ করব, ততই দেখব আমরা আরও জাগ্রত হয়েছি, অনুভব করব এই জপ আসলেই কতটা প্রাণবন্ত এবং তা আমাদের ভিতরেই রয়েছে, কিন্তু শুধু আমার কথায় ভরসা করবেন না । আপনি জপ করে দেখতে পারেন, নিজেই উপলব্ধি করতে পারবেন এবং অনুভব করবেন আপনার জীবনে কি পরিবর্তন এসেছে।

—০৫ মে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দ, হাইডেলবার্গ, জার্মানী

মে-০৬

ইন্দ্রিয়তৃপ্তি বাদ দিয়ে কৃষ্ণভজন করুন

আজকাল মানুষ ইন্দ্রিয়তৃপ্তি করতে খুব ব্যস্ত। আমাদের উচিত হচ্ছে তাদের কাছে গিয়ে বলা কৃষ্ণনাম, কৃষ্ণসেবা, কৃষ্ণভজন কিছু করুন।

— ০৬ মে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, ভক্তিবৃক্ষ অনুষ্ঠান, বেহালা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

মে-০৭

প্রকৃত সুখ কোথায়

জাগতিকরা ভাবে ইন্দ্রিয়তৃপ্তির মধ্যেই সকল সুখ নিহিত। কৃষ্ণসেবায় যে প্রকৃত সুখ রয়েছে তারা তা বুঝতে পারে না। এখানে উচ্চতর উদ্দেশ্য সাধনের মাধ্যমে প্রকৃত সুখ অর্জন করা যায়। তাদের ধারণা ঠিক আছে, “ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ” এখন আমরা অর্থ উপার্জন করব, ইন্দ্রিয়তৃপ্তি করব এবং জীবনাবসানে মোক্ষের জন্য যাব । কিন্তু ভক্তিমূলক সেবার মাধ্যমে আমরা প্রেম সম্পর্কে জানতে পারি এবং প্রেম হচ্ছে কৃষ্ণের প্রতি ভালবাসার পরিপূর্ণতা এবং কৃষ্ণই সকল সুখের আধার।

—মে ০৭ ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, শ্রীমদ্ভাগবতম, ৩/৩০/৭, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া

মে-০৮

দ্রুত কৃপা

ভক্তদের করুণা খুবই শক্তিশালী এবং তারা কৃষ্ণকে বাধ্য করতে পারে অহৈতুকীভাবে কৃপা দেয়ার জন্য। যদি তুমি তোমার সময় না আসা পর্যন্ত লাইনে অপেক্ষা করতে চাও তাহলে তুমি তা করতে পার। কিন্তু যদি তুমি দ্রুত বিশেষ কৃপা পেতে চাও তাহলে যেকোনভাবে তুমি তা পেতে পার । গুরুদেব এবং বৈষ্ণবদের কৃপায় তুমি দ্রুত কৃপা লাভ করতে পার।

—মে ৮, ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত, আটলান্টা, ইউ.এস.এ

মে-০৯

প্রতিকূলতাই সাফল্যের সোপান

কখনও কখনও কৃষ্ণ প্রচারের ক্ষেত্রে পরিস্থিতিকে আরও কঠোর করে ফেলেন যাতে সে প্রচারের ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য বাধ্য হয়। তাই এটা বলা হয় যে, প্রতিকূলতাই সাফল্যের সোপান। তাহলে এটা দ্বারা বোঝায় যে, প্রচারকে আরও ব্যাপ্ত করার জন্য তোমাকে তোমার চিন্ময় বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করতে হবে।

—০৯মে ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দ, টরেন্টো, কানাডা

মে-১০

জাগতিক শক্তিকে অতিক্রম করার সহজ এবং যথার্থ পন্থা

জড়জগত খুবই বিপদজনক জায়গা এবং জাগতিক শক্তিকে অতিক্রম করা খুব কঠিন। কৃষ্ণের শরণাগত হলে এটি খুব সহজ এবং এটিই যথার্থ পন্থা।

—১০ মে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ, সান্ধ্যকালীন প্রবচন, ডালাস, ট্যাক্সাস

মে-১১

গুরুদেবকে প্রতিক্রিয়া ভোগ করতে হয়

গুরু এবং শিষ্যের মধ্যে হৃদয়ের সংযোগ বিদ্যমান । যখন একজন শিষ্য স্বাভাবিকভাবে গুরুকে সহযোগিতা করেন, গুরু সেই প্রার্থীকে দীক্ষার জন্য কৃষ্ণের নিকট উপস্থাপন করেন । যদি সেই শিষ্য নিয়ম পালন না করে, তাহলে গুরুকে একজন অযোগ্য প্রার্থীকে কৃষ্ণের নিকট উপস্থাপন করতে হয় এবং তখন গুরু এর প্রতিক্রিয়া ভোগ করেন।

—১১ মে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, চেন্নাই, ভারত

মে-১২

গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক অত্যন্ত উচ্চমানের

এটি খুবই উচ্চমানের সম্পর্ক এবং প্রেমময়ী সম্পর্ক। প্রথমে শিষ্য সর্বদা গুরুকে শ্রদ্ধা অর্পণ করবে, কারণ গুরুর কৃপায় কেউ কৃষ্ণকে পেতে পারে। এখন আমি কৃষ্ণের নিকট পৌঁছে যাব, আমার কি একজন গুরুর প্রয়োজন নেই ? প্রহ্লাদ মহারাজ যখন শ্রীনৃসিংহদেবকে বুঝতে পারলেন, নৃসিংহদেব তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি যেকোন বর চাইতে পারো।” প্রহ্লাদ মহারাজ বললেন- একমাত্র গুরুদেবের কৃপায় আমি পরমেশ্বর ভগবান, আপনাকে সরাসরি দেখতে সমর্থ হয়েছি। তাই আমি নিরন্তর গুরুদেবের সেবা করার আশীর্বাদ প্রার্থনা করি। তাই, জড়জগতে প্রত্যেককে গুরুদেবের সেবা চালিয়ে যাওয়া উচিত, এমনকি চিন্ময় জগতেও। জড়জগতে গুরুদেবের সাথে বিধিবৎ সম্পর্ক রাখতে হয়। চিন্ময় জগতে এই সম্পর্ক বন্ধুর চেয়েও বেশি, পুরনো বন্ধু। এটি হল নিত্য সম্পর্ক।

—১২ মে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দ, ব্যাসপূজা প্রবচন, কুয়েনচা

মে-১৩

নিজেদেরকে ঠকানো

যদি আমরা বাসনা করি যে, “হ্যাঁ, আমি প্রকৃত সত্য জানতে চাই, পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে লাভ করতে চাই।” তখনই আমি প্রকৃত সুখী । আমি নিজেকে প্রতারিত করতে চাই না এবং তখনই দ্রুত উন্নতি ঘটবে । কিন্তু যদি আমরা আমাদের সম্পর্কে সতর্ক না হই যে, আমি কি চাই, তাহলে আমরা দেখব যে আমরা প্রতারিত হচ্ছি। কে আমাদের প্রতারণা করছে ? আমরা নিজেরাই নিজেদের সাথে প্রতারণা করছি।

—১৩ মে ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দ, এস.টি লুইস, ইউ.এস.এ

মে-১৪

কৃষ্ণভাবনামৃত ছাড়া শান্তি অসম্ভব

শান্তি ঘড়া কিভাবে আমরা সুখ হতে পারি ? আর আপনার নিকর্ট যদি কৃষ্ণভাবনামৃত না থাকে তবে। কিভাবে সেখানে কোন শান্তি থাকতে পারে ?

—১৪ মে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ, ডালাস, ট্যাক্সাস, আমেরিকা

মে-১৫

শান্তিপূর্ণ ও সুখী হবার পন্থা

আমরা তুলনামূলক হরেকৃষ্ণ কীর্তন ও পারমার্থিক সেবা সম্পাদনের দ্বারা শান্তিপূর্ণ ও সুখী হতে পারি । আমরা যদি ভক্তিমূলক সেবায় উত্তরণ করতে পারি, তাহলে আমরা প্রকৃতই এই পৃথিবীতে পরমানন্দে বসবাস করতে পারব।

—১৫ মে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ, অয়েস্টবারি

মে-১৬

ভগবানের সেবা হচ্ছে শুধুই সুখ

পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্তরা ইন্দ্রিয় পরিতৃপ্তির কোনোরূপ বাসনা করেন না। এমনকি তাদেরকে মুক্তি প্রদান করা হলেও তাঁরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁরা ভগবানের চিন্ময় প্রেমময়ী সেবায় যুক্ত হয়ে স্বভাবতই খুশি। ভগবানকে সেবা করা হচ্ছে শুধুই সুখ ।

—১৬ মে ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, শ্রীমদ্ভাগবত-৩/১৬/২২-২৩, নিউ ওলিন্স

মে-১৭

চিন্ময় শব্দতরঙ্গ জপের মাধ্যমে কলির কু-প্রভাব প্রতিহত করা

হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ শুধু জপকারীরই উন্নতি বিধান করে না, বরং যারা নীরবে তা শ্রবণ করছেন এমনকি গাছপালা, জীবজন্তু প্রত্যেকেই এই চিন্ময় শব্দ তরঙ্গের দ্বারা উপকৃত হন। কৃপাহীনতা, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব, নীতি নিয়মের অভাব এবং মিথ্যার প্রভাব কলির। এই সব খারাপ প্রভাবকে প্রতিহত করার জন্য শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই কলিযুগের জন্য সর্বমঙ্গলময় এবং সবচেয়ে অনুকূল প্রভাব বিস্তারকারী এই চিন্ময় শব্দ তরঙ্গ নিয়ে এসেছেন।

—১৭ মে ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দ, সানডে ফিস্ট, স্টকহোম, সুইডেন

মে-১৮

কাঠের আগুন জ্বলতে হবে

কাঠের ভিতরে যেমন আগুন আছে, এই জড় জগতের বদ্ধজীবদের ভিতরেও আধ্যাত্মিক শক্তিরূপ আগুন আছে। কাঠ যখন আগুনের সংস্পর্শে আসে এটি নিজে জ্বলে এবং চতুর্দিক আলোকিত করে, ঠিক তেমনি বদ্ধ জীব যখন আধ্যাত্মিক গুরুদেব এবং বৈষ্ণবদের সংস্পর্শে আসে তারাও কৃষ্ণভাবনাময় হয়ে উঠে এবং অন্যদেরকেও কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলে।

—১৮ মে ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দ, সানডে ফিস্ট, আল্মভিক, সুইডেন

মে-১৯

ইন্দ্রিয়ের ক্রিয়াকলাপ বন্ধ কর না, কেবল তাকে কৃষ্ণকেন্দ্রিক কর

ভক্তিমূলক সেবা মানে ইন্দ্রিয়ের ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করা নয়, বরং সেগুলোকে কৃষ্ণকেন্দ্রিক করা। কৃষ্ণপ্রসাদ আস্বাদন, ফুলের ঘ্রাণ নেওয়া, বিগ্রহ অৰ্চন, হরিনাম জপ, ভক্তসেবা, গুরুদেব এবং বৈষ্ণবদের চরণ স্পর্শের মাধ্যমে ইন্দ্রিয়সমূহ চিন্ময় হয়ে উঠে । আর এভাবেই ইন্দ্রিয়সমূহ শুদ্ধ হয়ে উঠে।

—১৯ মে ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দ, শ্রীমদ্ভাগবত প্রবচন, আল্মভিক, সুইডেন

মে-২০।

গুরুসেবায় কৃষ্ণ বেশি প্রীত হন

যদি আমরা উন্নত হই, ভগবান এবং তাঁর ভক্তদের সেবা করার প্রতি আমরা আরও উৎসাহী হব । সাধারণত, প্রথমে গুরুদেবের সেবা করার প্রতি ইচ্ছা আসে। গুরুদেবের কৃপায় তারা তা বাড়িয়ে তোলে এবং আমাদেরও মূলত কৃষ্ণের সেবা করার প্রতি একই ইচ্ছা রয়েছে। তাই কৃষ্ণ বলেছেন যে, সর্বপ্রথম গুরুকে সেবা করার অনুশীলন করতে হবে । যখন গুরু ব্যক্তিগতভাবে সেবিত হবেন, তখন কৃষ্ণ বেশি প্রীত হবেন ।

—২০ মে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, শ্রীমদ্ভাগবত-১/৮/২৭, দামোদরদেশ (দুবাই)

মে-২১

নিরন্তর কৃষ্ণভাবনামুতে যুক্ত থাকুন

আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত থামানো উচিত নয় । যেকোনোভাবেই হোক, নিরন্তর জপ করব, সেবা করব, আমাদের ইন্দ্রিয়সমূহকে কৃষ্ণের সেবায় নিয়োজিত রাখব, এগুলিই উদ্দেশ্য, আমরা সফল হব এবং কৃষ্ণের নিকট ফিরে যাব।

— ২১ মে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, শ্রীমদ্ভাগবত, ৩/২১/১৩, ভক্তিবেদান্ত ম্যানর, যুক্তরাজ্য

মে-২২

গুরু এবং কৃষ্ণই সকল কৃত্বিতের দাবীদার

ভক্তরা কখনোই গুরুদেব এবং কৃষ্ণকে কৃতিত্ব দিতে দ্বিধাবোধ করেন না। তবে পার্থক্য এইটাই যে, যেখানে জড়বাদী লোকেরা সর্বদাই ব্যক্তিগতভাবে কৃতিত্ব পাওয়ার জন্য উদ্বিগ্ন থাকে সেখানে ভক্তরা লজ্জিত হন যখন তাকে কৃতিত্ব দেয়া হয়। ঈশ্বর সম্পর্কিত জ্ঞান বোঝার জন্য এবং তা প্রচার করার জন্য ভক্তটি মহিমান্বিত হন এবং কৃষ্ণই সব ব্যবস্থাপনা করে থাকেন। প্রকৃত বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে সত্যকে বোঝা।

—২২ মে, ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ, আগমনী অভিভাষণ, আটলান্টা, ইউ.এস.এ

মে-২৩

ভগবান শ্রীচৈতন্যদেব সবাইকে ভক্তি প্রদান করেন

যাঁরা কৃষ্ণের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তাদেরকে তিনি ভক্তিদান করেন। কিন্তু যারা আত্মসমর্পণ করেনি তাদেরকেও ভক্তি প্রদান করেন একমাত্র ভগবান শ্রীচৈতন্যদেব।

—২৩ মে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, হাউজ প্রোগ্রাম, আকরা, ঘানা

মে-২৪

প্রার্থনা ভগবানের সাথে আদান প্রদানের মাধ্যম

প্রার্থনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এটি ভক্ত এবং ভগবানের মধ্যে গোপন কথোপকথন। অক্রুর প্রার্থনার মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করেছিলেন । স্কন্দপুরাণে প্রার্থনার মহিমা ব্যক্ত হয়েছে যে ভক্তের জিহ্বা সর্বদাই প্রার্থনায় রত থাকে, তিনি এমনকি সাধু ব্যক্তিদের দ্বারা সম্মানিত হন এবং দেবতাদের দ্বারাও পূজিত হন। এটি কৃষ্ণের সাথে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। কেননা আমরা তাঁর কাছে। প্রার্থনা করি যেহেতু তার সাথে আমাদের সম্পর্ক আছে।

—২৪ মে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, শ্রীমদ্ভাগবত ৬/৯/৪৬, শ্রীধাম মায়াপুর, ভারত

মে-২৫

কৃপাপূর্বক সহ্য করে এবং দুঢ় থাকো

শ্রীল প্রভুপাদ বলেছিলেন- আমাদের প্রয়োজন তালগাছ বা নারকেল গাছের মতো হতে চেষ্টা করা। যে গাছগুলি ঝড় আবহাওয়ায় অনেকটা বেঁকে যায়! আবার যখন ঝড় থেমে যায় তখন তারা পূর্বের মতো সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। বড় কাষ্ঠল বৃক্ষগুলি কদাচিৎ বাঁকা হতে পারে। অতএব বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতিকে সহ্য করতে চেষ্টা কর এবং তোমার কৃষ্ণচেতনাকে স্থির রাখ । ফলস্বরূপ কি হবে তাতে কিছু যায় আসে না। যেকোন পরিস্থিতিতেই গুরু এবং গৌরাঙ্গের সেবার অধীনে থাকার চেষ্টা কর।

—মে ২৫, ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ, পদ্ম, বাংলাদেশ

মে-২৬

নারী ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্য

আধ্যাত্মিকভাবে নারী ও পুরুষের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। মুখ্য বিষয়টি হচ্ছে, চিন্ময় আত্মা বা জীবনীশক্তি, যা মানব এবং পশুদেহেও রয়েছে। কিন্তু মানবজাতি হচ্ছে এমন একটি প্রজাতি যারা আধ্যাত্মিকতা অর্জনের মাধ্যমে বন্ধন মুক্ত হতে পারে। তাই নারীদেরও পুরুষের ন্যায় আধ্যাত্মিক ভাবধারা অর্জনের সম সুযোগ রয়েছে যদি তারা তা চর্চা করে।

—২৬ মে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ, রেডিও শো, ইউ.এস.এ

মে-২৭

কৃষ্ণভাবনামৃত মানে ধর্মের পরিবর্তন নয়

কৃষ্ণভাবনামৃত মানে কোন ধর্ম নয় যার মাধ্যমে তুমি পরিবর্তিত হয়ে যাবে। যেমন- আমি খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, আমি খ্রিস্টধর্ম অনুসরণ করছি না। আমরা এটাকে ধর্মের একটা উন্নত স্তর হিসেবে মনে করি যেখানে ধর্মের উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈশ্বরের সাথে গভীর সম্পর্কযুক্ত হওয়া আত্মোপলব্ধি এবং ভগবৎ উপলব্ধি; এবং এটি কৃষ্ণভাবনামৃত না যে, আমি ধর্মান্তরিত হয়ে গেছি । কৃষ্ণভাবনামৃত খ্রিস্টানদেরও ভগবানের সন্তান হিসেবে দেখে।

—২৭ মে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ, রেডিও শো, নিউ অর্লিন্স, ইউ.এস.এ

মে-২৮

ব্রাহ্মণ সৃষ্টি এবং প্রশিক্ষণের কেন্দ্রস্থল

প্রতিটা ইস্কন মন্দির প্রকৃতপক্ষে ব্রাহ্মণ সৃষ্টি এবং প্রশিক্ষণের কেন্দ্রস্থল । আমাদের ন্যাড়া মাথা এবং শিখা রয়েছে যা ব্রাহ্মণদের প্রকৃত পরিচায়ক। প্রবীণ ব্রাহ্মণরা যারা জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণ নন তাদেরকে ব্রাহ্মণ হিসেবে স্বীকার করেন না, কিন্তু তাদের উত্তরসূরীরা দেখছেন যে কৃষ্ণভাবনামৃত কি করছে এবং তারা স্বতস্ফূর্তভাবে বলেন যে, তুমি ব্রাহ্মণ গুণাবলীর অধিকারী। কেননা একজন বৈষ্ণবই একজন ব্রাহ্মণ । তাই আমাদের মন্দিরগুলো হচ্ছে ব্রাহ্মণ সৃষ্টি এবং প্রশিক্ষণের কারখানা।

—২৮ মে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ, নিউ অর্লিন্স, ইউ.এস.এ

মে-২৯

শ্রীল প্রভুপাদের জন্মস্থানে সেবা করার মহিমা

শ্রীল প্রভুপাদ বলতেন অন্যস্থানে সেবা করার তুলনায় তাঁর জন্মস্থান নগরীতে সেবা করলে ১০,০০০ গুণ বেশি কূপা লাভ করতে পারেন।

—২৯ মে, ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ, ডায়েরি, বৃহস্পতিবার, কলকাতা, ভারত

মে-৩০

বৈষ্ণব অপরাধ হচ্ছে মূল থেকে লতা ছেদনের মতো

যখন আমরা মারাত্মক বৈষ্ণব অপরাধ করি তখন আমাদের ভক্তিলতার মূলছেদন হয়ে যায়। তখন এটি পুষ্টি পায় না এবং স্বাভাবিকভাবে সেটি শুকিয়ে যায় এবং তখন আমরা হরিনাম জপ, গ্রন্থ অধ্যয়ন, বিগ্রহ অৰ্চন, গ্রন্থ প্রচার এইসব কিছুর প্রতি রুচি হারিয়ে ফেলি। এর চাইতে দুর্বিষহ আর কি হতে পারে? আমরা সেবার প্রতি রুচি হারিয়ে ফেলি। এর চেয়ে অধিকতর খারাপ আর কি হতে পারে?

—৩০ মে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ, প্রবচন, শ্রীমদ্ভাগবতম, ৪/৪/১৯, লস্ অ্যাঞ্জেলস

মে-৩১

কলিয়ুগের মানুষ

আজকাল সবকিছু এই জড় দেহকে ঘিরে এবং প্রতিটি কার্যের সফলতার মানদ- হচ্ছে যে এর দ্বারা একজন ব্যক্তির নাম, যশ এবং ইন্দ্রিয়তৃপ্তির সুবিধা কতখানি বেড়েছে। বহু জনমের পর আমরা এই ক্ষণিকের এই মানব জনম পেয়েছি এবং আমাদের প্রকৃতই চেষ্টা করা উচিত যাতে করে আমরা সকল কলুষতা এবং এই জড়জগতের মায়ার বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারি । কিন্তু সবাই এই মানসিকতা থেকে অনেক দূরে আছে ।

—৩১ মে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ, শ্রীমদ্ভাগবত প্রবচন, নিউ অর্লিন্স, আমেরিকা

সন্ন্যাসী শিষ্য

মুকুন্দ গোস্বামী

অস্ট্রেলিয়া

গোপাল কৃষ্ণ গোস্বামী

ভারত

ভানু স্বামী

চেন্নাই, ভারত

ভক্তি রাঘব স্বামী

ভারত

ভক্তি বিকাশ স্বামী

ভারত

ভক্তিবিদ্যা পূর্ণ স্বামী মহারাজ

শ্রীধাম মায়াপুর, ভারত

শ্রীমৎ ভক্তি পুরুষোত্তম স্বামী

শ্রীধাম মায়াপুর, ভারত

গৌরাঙ্গ প্রেম স্বামী

শ্রীধাম মায়াপুর, ভারত

ভক্তি সিদ্ধান্ত স্বামী

সুইডেন

ভক্তি ধীর দামোদর স্বামী

আফ্রিকা

ভক্তি বিনোদ স্বামী

কোয়েম্বাটুর, ভারত

ভক্তি নিত্যানন্দ স্বামী

শ্রীধাম মায়াপুর, ভারত

মুরলী কৃষ্ণ স্বামী

ওড়িশা, ভারত

ভক্তি মুকুন্দ স্বামী

মালয়েশিয়া

ভক্তি প্রিয়ম গদাধর স্বামী

রংপুর, বাংলাদশ

ভক্তি বিনয় স্বামী

ঠাকুরগাঁও, বাংলাদেশ

ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী

সিলেট, বাংলাদশ

ভক্তি অর্জব প্রীতিবর্ধন স্বামী

শ্রীধাম মায়াপুর, ভারত

ভক্তি বিলাস গৌর চন্দ্র স্বামী

শ্রীধাম মায়াপুর, ভারত

ভক্তি বিজয় ভাগবত স্বামী

শ্রীধাম মায়াপুর, ভারত

চৈতন্য চন্দ্র চরণ প্রভু (দীক্ষা-গুরু)

রাশিয়া

যোগাযোগ করুন

ঠিকানা

Jayapataka Swami Archives
২য় তলা, প্রভুপাদ নিবাস, অভয় নগর, মায়াপুর, পশ্চিমবঙ্গ ৭৪১৩১৩, ভারত

কল করুন

ভারত অফিস ফোন: +৯১৭৩৮৪৫২২২১১
ভারত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর: +৯১৯৮০০৯১৫৫৫৩
বাংলাদেশ অফিস এবং হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর: +৮৮০১৩০৩৭০৪০৩১

ইমেইল করুন

info@jayapatakaswamibangla.com
publications.victoryflag@gmail.com

খোলা থাকবে

সোমবার - শনিবার